নক্ষত্রের জীবন
রাতের আকাশে তাকালে দেখতে পাই ছোট ছোট কুপিবাতির মত জ্বলছে কিছু বিন্দু। এরা অনেকেই আকারে আমাদের সূর্যের চেয়ে বিশাল, কিন্তু অনেক দুরে অবস্থিত হওয়ায় ছোট বিন্দুর মত দেখা যায়। তারা নক্ষত্র। যারা এই নিকষ অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাবিশ্বকে নিরন্তর আলোকিত করে যাচ্ছে। আশ্রয় দিচ্ছে গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহাণু এবং ধুমকেতুদের। গঠন করছে গ্যালাক্সি। মহাবিশ্বের সঞ্জীবনী শক্তি তারা। যেমন করে সূর্য বাঁচিয়ে রেখেছে আমাদের, এই পৃথিবীর সকল জীবকে।
নক্ষত্রের নিজস্ব আলো আছে, আমরা সবাই জানি। কোথা থেকে এলো সেই আলো? তারাদের জন্ম হয় গ্যাসীয় বস্তুপুঞ্জ দ্বারা তৈরি বিশালাকার মহাজাগতিক মেঘ বা Giant Molecular Clouds থেকে। কিছু অন্ধলে গ্যাসপুঞ্জ অধিক ঘনীভূত অবস্থায় থাকে, যাকে Nebula বা নীহারিকা ডাকা হয়। মলিকিউলার ক্লাউডের নীহারিকাগুলোই নক্ষত্রের জন্মস্থান।
নীহারিকার মধ্যে থাকে ৪৫%-৭৫% হাইড্রোজেন, ২০%-৩৫% হিলিয়াম ও অন্যান্য বস্তুপুঞ্জ থাকে ৫%। একসময় নীহারিকার কিছু অঞ্চল, যেখানে ঘনত্ব তুলনামূলক বেশি তা আপন মহাকর্ষের প্রভাবে সংকুচিত হতে থাকে এবং গ্যাসীয় গোলক তৈরি করতে থাকে। এই বলসদৃশ অংশটিকে তখন আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায় এবং তাকে বলা হয় Protostar বা শিশু নক্ষত্র। এটি নক্ষত্রের জন্মের প্রথম ধাপ।
পরবর্তীতে প্রোটোস্টার নক্ষত্রের সুগঠিত কেন্দ্রে পরিণত হয়। মহাকর্ষের প্রভাবে কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস আবদ্ধ হয়ে তাকে ঘিরে বাইরের বস্তুসমূহ আকর্ষিত হতে থাকে এবং নক্ষত্রটিতে ভর যোগ হতে থাকে।
ক্লাউডের আয়তনের উপর ভিত্তি করে ছোট, মাঝারি বা বড় মাপের নক্ষত্র তৈরি হয়।
কেন্দ্রকে ঘিরে Surface (উপরিভাগ) তৈরি হতে থাকে। গ্যাসীয় বস্তুপুঞ্জ কেন্দ্রে অধিক ঘনীভূত থাকে বলে কেন্দ্রের ভর পুরো নক্ষত্রের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি এবং সেখানে তীব্র তাপ ও চাপ উৎপন্ন হয়। মিলিয়ন বছর পরে অত্যধিক তাপ ও চাপের কারণে কেন্দ্রে থার্মোনিউক্লিয়ার ফিউশন আরম্ভ হয়। ফিউশন প্রক্রিয়ায় হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম প্রস্তুত হতে থাকে। ছড়িয়ে পড়ে নক্ষত্রের আলো এবং তাপ।
ততদিনে কেদ্রকে ঘিরে আকর্ষিত হতে থাকা গ্যাসের ডিস্কসমূহ মহাকর্ষের প্রভাবে জুড়ে গিয়ে উপরিভাগ গঠন করে ফেলে। তৈরি হয়ে একটি পূর্ণ নক্ষত্র বা Main Sequence Star.
থার্মোনিউক্লিয়ার ফিউশন আস্তে আস্তে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পূর্ণাঙ্গ হাইড্রোজেন বার্নিং স্টার গঠিত হয়, দিতে থাকে তাপ ও আলো। দশ মিলিয়ন বছর পর্যন্ত নক্ষত্র তার শিশুকাল অতিবাহিত করে। এই সময়কে বলা হয় T-Tauri Phase. নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা দিনে দিনে বাড়তে থাকে, সমস্ত দেহে ফিউশন ছড়িয়ে পড়ে। এক সময় সে পৌছায় তার পূর্ণ যৌবনে।
যৌবনকালে সবকিছুই তেজস্বী থাকে।নক্ষত্রও তার ব্যতিক্রম নয়। পুরো জীবনব্যাপী ফিউশন চলাকালীন ফিউশনের ফলে সৃষ্ট বাইরের দিকে চাপ ও মহাকর্ষ বলের মধ্যে সাম্যতা বজায় থাকে। তাই নক্ষত্র সংকুচিত কিংবা প্রসারিত হয় না। মিলিয়ন বছর ধরে আলো বিলিয়ে যায়।
কিন্ত ক্রমাগত ফিউশনের ফলে সে প্রতিনিয়ত ভর হারাতে থাকে। জ্বালানি শেষ হতে শুরু করে। হাইড্রোজেন কমে যাওয়ায় ফিউশনের হার কমে যায়। তখন বিস্ফোরণ ও মহাকর্ষ বলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, নক্ষত্রের মৃত্যু ঘনিয়ে আসে৷ তবে মরেও যেন অমর থাকে তারা। কারণ শেষে তারা যে পরিণতি পায় তাতেই কাটিয়ে দেয় কোটি বছর।
নক্ষত্রের তিনটি শেষ পরিণতি দেখা যায়। মৃত্যুর পরে তারা White Dwarf বা শ্বেত বামন, Neutron Star বা নিউট্রন তারকা অথবা Black Hole বা কৃষ্ণ গহবরে পরিণত হয়। শেষ পরিণতি কী হবে তা নির্ভর করে তাদের ভরের উপর। ভরের ভিত্তিতে নক্ষত্রের শেষ অবস্থা নির্ধারণে বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর একটি স্কেল তৈরি করেছেন। এর নাম চন্দ্রশেখর লিমিট।
সুর্যের ভরকে বলা হয় ১ সৌর ভর বা 1 Mo। চন্দ্রশেখর প্রমাণ করে দেখান যে, সংকুচিত হওয়ার পর নক্ষত্রের কেন্দ্রের ভর সর্বোচ্চ 1.4 Mo পর্যন্ত হলে তা একটি হোয়াইট ডোয়ার্ফ বা শ্বেত বামন হবে। কেন্দ্রের ভর 1.5 Mo থেকে 3 Mo হলে হবে লিউট্রব স্টার ও এর চাইতে বেশি হলে পরিণত হবে ব্ল্যাকহোলে।
যখন নক্ষত্রের মহাকর্ষ এবং ফিউশনের মধ্যকার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, তখন কেন্দ্র তীব্র মহাকর্ষের প্রভাবে আবার সংকুচিত ও উত্তপ্ত হতে থাকে এবং বাকি থাকা হাইড্রোজেনকে আরো দ্রুত ফিউজ করে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন করতে থাকে। এই গতিশক্তি উপরিভাগকে বাইরের দিকে ঠেলতে থাকে. নক্ষত্রটি সম্প্রসারিত হয়। আমাদের সূর্যের মতো মাঝারি বা ছোট মাপের তারাগুলো এ প্রক্রিয়ায় Red Giant (লাল দানব) এ পরিণত হয়।
নক্ষত্রটির আকার আগের চেয়ে অনেকগুণ বৃদ্ধি পায়।সূর্যের মত তারাগুলোর প্রসারণের হার বেড়ে গেলে তারা তাদের উপরিভাগকে চাপের প্রভাবে মহাকাশে ছড়িয়ে দেয় এবং Planetory Nebula -র জন্ম হয়।
বাকি থাকে অত্যন্ত উত্তপ্ত , ঘনীভূত, তীব্র মহাকর্ষবিশিষ্ট কেন্দ্র। কেন্দ্র এত বেশি উত্তপ্ত হয় যে এটি হাইড্রোজেন থেকে প্রস্তুত করা হিলিয়ামকেও ফিউজ করার সক্ষমতা অর্জন করে।
হিলিয়াম থেকে পর্যায়ক্রমে কার্বন, অক্সিজেন, সিলিকন ও আয়রন উৎপন্ন হয়।
1.4 Mo বা তার কম ভরের কেন্দ্রবিশিষ্ট সংকুচিত নক্ষত্রগুলো কার্বন বা অক্সিজেন পর্যন্ত ফিউজড হয়ে স্থিতিশীল হয়ে যায়। এরপর কার্বন ও অক্সিজেন দ্বারা গঠিত মৃত নক্ষত্রটিতে আর কোনো ফিউশন হয় না এবং ধীরে ধীরে তাপ ও আলো বিকিরণ করে ঠান্ডা হতে থাকে। ফিউশন না থাকায় এর উজ্জ্বলতা অনেক কম হয় এবং দেখতে সাদা স্নিগ্ধ আলোকবর্তিকার মত দেখায়। তাই এর নাম White Dwarf বা শ্বেত বামন।
এই নক্ষত্রগুলোর মধ্যে পদার্থসমূহ এত ঘনীভূত অবস্থায় থাকে যে, এক চামচ পদার্থের ওজন হবে ১৫ টনেরও বেশি। মহাকর্ষও অত্যধিক হওয়ায় যেকোনো কিছু এই তারার উপর রাখলে এর টানে চ্যাপ্টা হয়ে যাবে। হোয়াইট ডোয়ার্ফরা খুব ধীরে ধীরে তাদের তাপ আর আলো বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়। তাই তারা অনেকদিন ধরে আলো দেয়। বলা হয় মহাবিশ্বের শেষ আলোর উৎস হবে তারা, কারণ এদের মতো আর কোনো নক্ষত্র এত দীর্ঘদিন ব্যাপী আলো দেয় না। ঠান্ডা হওয়ার পর তারা আলো হারিয়ে কালো বামনে পরিণত হবে। তখন তার অবস্থা হবে একখন্ড পোড়া কাঠের মত। নিকষ কালো, জীবনের কোনো লক্ষণ থাকবে না তাতে। আমাদের সূর্যও একসময় ডোয়ার্ফে পরিণত হবে।
মহাকর্ষজনিত ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পর 1.4 Mo থেকে 3 Mo এর সমান ভরবিশিষ্ট কেন্দ্রের তারাগুলোর প্রসারণ হার আরো অনেক বেশি হয়। তখন তারা পরিণত হয় Red Supergiant এ। এরপর প্রসারণের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাইরের আবরণকে বিস্ফোরণ আকারে তীব্র গতিতে মহাকাশে ছড়িয়ে দেয়। যাকে আমরা Supernova Explosion বা অতি-তারকা বিস্ফোরণ বলে থাকি।
বিস্ফোরণের পর বাকি থাকা কেন্দ্রটি শ্বেত বামনের মত একই প্রক্রিয়ায় সংকুচিত হতে থাকে। ভর বেশি হওয়ায় সংকোচনের হারও বেশি হয়। কেন্দ্র এত উত্তপ্ত হয় যে, তা কার্বন আর অক্সিজেন ফিউশনের পর সিলিকন ও আয়রনও সৃষ্টি করে। তীব্র মহাকর্ষের ফলে পরমাণুর মধ্যে থাকা ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের ফাঁকা স্থান দূর হয়ে যায়। একে বলা হয় Electron Degeneracy.
ডিজেনারেসির ফলে ইলেকট্রন ও প্রোটন মিলে নিউট্রন গঠিত হয়। নক্ষত্রটিতে তখন বেশিরভাগ অংশজুড়ে নিউট্রন থাকে ঠাসাঠাসি করা অবস্থায়। উপরিভাগে কিছু জায়গা জুড়ে থাকে ইলেকট্রন ও প্রোটন। সব নিউট্রনগুলো মিলে অতি উত্তপ্ত জেলির আকারে থাকে। এই অবস্থার নাম Neucleopasta. নিউট্রন দিয়ে পূর্ণ বিধায় এই তারার নাম Neutron Star.
নিউট্রন স্টারের ঘনত্ব অত্যধিক। এক চামচ পদার্থের ভর কয়েক বিলিয়ন টন পর্যন্ত হয়। অধিক ঘনত্বে বেশি ভর থাকার কারণে এর মহাকর্ষ বলও অনেক বেশি। কাছাকাছি কোনো বস্তুক্ব গুঁড়ো করে দিতে পারে এরা, এই প্রক্রিয়ার নাম Spaghettification.
নিউট্রন তারকা খুব দ্রুত ঘুরে। এদের উপরিভাগের তাপমাত্রা 10¹¹ থেকে 10¹² কেলভিন পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কয়েক প্রকারের নিউট্রন স্টার আছে। এর মধ্যে Pulsar, Magneter, Binary Neutron Stars উল্লেখযোগ্য। নিউট্রন তারার ম্যাগনেটিক ফিল্ড অত্যন্ত শক্তিশালী, একই সাথে তারা তীব্র বেগে ঘোরে। ফলে চারপাশে ইলেকট্রিক ফিল্ড সৃষ্টি হয়। এই ফিল্ড ইলেকট্রন ও প্রোটনকে মেরুর দিকে গতিশীল করে তোলে। গতিশীলতার ফলে নক্ষত্রটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ ঘটায়। এই বিকিরণকে বলা হয় Electromagnetic Pulse. তাই এই নক্ষত্রের নাম পালসার।
পালসারের প্রতিটি পালসের সময়ের পার্থক্য খুব নিখুঁত। এজন্য তাদের বলা হয় মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভালো ঘড়ি। সময়ের সাথে সাথে তড়িৎচৌম্বক ক্ষমতা কমে যায় এবং পালসার একসময় তার পালস নির্গত করার ক্ষমতা হারায়। পালসের ধরনের উপর ভিত্তি করে এক্স-রে, রেডিও বা গামা-রে জাতীয় পালসার দেখা যায়।
বড় আকৃতির নিউট্রন তারকাগুলোকে ডাকা হয় ম্যাগনেটার। এদের চৌম্বক ক্ষেত্র মহাবিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র। তাই এর নাম ম্যাগনেটার। পালসারের মতো এরাও বিভিন্ন রশ্মি বিকিরণ করতে পারে।
দুইটি নিউট্রন তারকা অনেক সময় নিজেদের মহাকর্ষে আবদ্ধ হয়ে একে অপরকে ঘিরে ঘুরতে থাকে। তখন তাদের বলা হয় বাইনারি নিউট্রন স্টার। এরা নিজেদের মহাকর্ষ ক্ষেত্র থেকে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের উৎপত্তি ঘটায়। ঘুরতে ঘুরতে এদের অনেকে একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তখন তারা বড় আকৃতির ম্যাগনেটার কিংবা ব্ল্যাকহোলের জন্ম দেয়।
ব্ল্যাকহোল নিঃসন্দেহে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বেশি কৌতূহল জাগানো বস্তু। কারণ এই নক্ষত্রগুলোর ভেতরে কী চলে সেটা কেউ এখনও সঠিকভাবে জানে না, অনুমান করা যায় মাত্র। নক্ষত্রের শেষ জীবনে সুপারনোভা হওয়ার পর তার কেন্দ্রের ভর 3 Mo এর বেশি হলে অত্যধিক ভরের প্রভাবে এরা নিউট্রন স্টারের চেয়েও আরো বেশি সংকুচিত হয়। এতটাই সংকুচিত হয় যে, সমস্ত ভর একটি ক্ষূদ্র জায়গাতেই কেন্দ্রীভূত থাকে। যাকে বলা হয় Singularity. এই স্থানে আকর্ষণ বল এতই বেশি যে, একটি নির্দিষ্ট দুরত্ব পর্যন্ত এটি সমস্ত বস্তুকে নিজের দিকে টেনে নেয়। যেখান থেকে কোনো বস্তু আর ফিরে আসতে পারে না, সেই শেষ সীমাকে বলা হয় Event Horizon বা ঘটনা দিগন্ত। সিঙ্গুলারিটি আর ইভেন্ট হরাইজন নিয়ে ব্ল্যাকহোল গঠিত। হরাইজনের ভেতরে কোনো কিছু প্রবেশ করলে তা আর বেরুতে পারে না, এমনকি আলোও না। ফলে পুরো জায়গাটিকে ভীষণ কালো দেখায়। তাই এর নাম ব্ল্যাকহোল।
হরাইজনের চারপাশে ব্ল্যাকহোলের আকর্ষণে আলোকিত বস্তসমূহ পরিভ্রমণ করে। এই আলোকিত অংশটিকে বলা হয় Accretion Disk. ব্ল্যাকহোলের ছবিতে আমরা মূলত অ্যাক্রেশন ডিস্কই দেখি। ইভেন্ট হরাইজনের ভেতরে বস্তুসমূহ তীব্র টান অনুভর করে। ভেতরের দিকে যেতে যেতে এক পর্যায়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শেষে অংশবিশেষ কোথায় যায় তার সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট ধারণা নেই। জনপ্রিয় হাইপোথিসিস অনুসারে, ব্ল্যাকহোলের অপর প্রান্তে থাকে হোয়াইট হোল। এর আচরণ ব্ল্যাকহোলের সম্পূর্ণ বিপরীত। গিলে নেয়া বস্তুকে হোয়াইট হোল বাইরে নিক্ষেপ করে। যদিও এই ধারণার সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই বিজ্ঞানীদের হাতে। তাই বস্তুর শেষ পরিণতি কী হবে তা পরিষ্কারভাবে জানা যায় না।
ব্ল্যাকহোল সাধারণত কয়েক ধরণের হয়। ছোট আকৃতির ব্ল্যাকহোলকে বলে Stellar Black Hole আর মাঝারি আকৃতির গুলোকে বলা হয় Intermediate Mass Black Hole. সবচেয়ে বড় ব্ল্যাকহোলগুলো হয় বিশালাকৃতির, মিলিয়ন সূর্যের সমান। এদের নাম Supermassive Black Hole. এরা অনেক বড তারকা কিংবা দুই বা ততোধিক ব্ল্যাকহোলের সমন্বয়ে গঠিত হয়। প্রতিটি স্পাইরাল গ্যালাক্সির কেন্দ্রে একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল থাকে। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেও এমন একটি ব্ল্যাকহোল রয়েছে যার নাম Sagittarius A*. এর ভর 4.1 মিলিয়ন সূর্যের ভরের সমান। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এর ছবি তুলতে সমর্থ হয়েছেন।
ব্ল্যাকহোল কোনো বস্তুকে টেনে নেওয়ার পাশাপাশি তার ইভেন্ট হরাইজন থেকে হকিং রেডিয়েশন নির্গত করে। এর ফলে ধীরে ধীরে সে বাষ্পীভূত হয়ে মিলিয়ে যায়।
নক্ষত্রের এই জীবনচক্র প্রবাহমান নদীর মতো চলমান। মহাবিশ্বে প্রতিনিয়ত কোটি তারার জন্ম হচ্ছে, অসংখ্য সুপারনোভা তৈরি হচ্ছে, নক্ষত্ররা মৃত্যুবরণ করছে। তবে মরে গিয়েও এর শেষ নেই। মৃত্যুর পর এ যেন এক পুনর্জীবন। নতুন রূপে আবির্ভূত হয়ে কোটি কোটি বছর করে রাজত্ব করে মহাকাশে, যেন মহাবিশ্বকে তারা শাসন করছে দোর্দন্ড প্রতাপে।
References -
Tags:
জ্যোতির্বিজ্ঞান